মেডিটেশন করতে লক্ষ্যণীয় ৫টি বিষয়

লেখক: উদ্ভাস | সঙ্কলনের দিন: জানুয়ারী 22, 2018

 

 

আজকাল টেনশন করেনা এমন কেউ কি আছে? পরীক্ষা নিয়ে টেনশন, ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে টেনশন কিংবা স্বাস্থ্য নিয়ে টেনশন।টেনশন যেনো আমাদের পিছুই ছাড়েনা! যার ফলে আমরা হৃদরোগ, অনিদ্রা, মাইগ্রেনসহ হাজার সমস্যায় ঝুঁকে পরি। আমরা পারিনা সুস্থতার সাধ অনুভব করতে। এর থেকে মুক্তির উপায় কি? কি করে পারি নিজেকে সবসময় প্রসন্ন রাখতে? এই প্রশ্নগুলোর বিপরীতে অনেকেই অনেক পথ বাতলে দিবে তা নিশ্চয়ই, কিন্তু এই সমস্যাগুলো সমাধানে সবচেয়ে সহজ ও সুন্দর পদ্ধতি হতে পারে মেডিটেশন। মেডিটেশনের মাধ্যমে আমরা অতি সহজে আমাদের সকল টেনশনকে দূর করতে পারি। শান্তির ও সুখের আভায় নিজেকে মুড়িয়ে উপভোগ করতে পারি সুন্দর জীবন। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কখন মেডিটেশন করবো, কিভাবে মেডিটেশন করবো কিংবা কিভাবে সমাপ্ত করবো মেডিটেশন। ঠিক এজন্যই আজকের লেখাটি।চোখ বুলিয়ে নিতে পারো এক নজরে।

 

১। মেডিটেশন করার সঠিক জায়গা ঠিক করা:

মেডিটেশন করার জন্য শান্ত এবং সুন্দর একটি জায়গা নির্বাচন করা উচিত।যেখানে তুমি নিরাপদ, শান্তি এবং আরামদায়ক অনুভব করবে। যদি তুমি তোমার বেডরুমকে মেডিটেশনের জন্য বেছে নাও তবে সেটিও হতে পারে চমৎকার।তবে, খেয়াল রাখতে হবে তোমার বেডরুমে যাতে এমন কোন কিছু না থাকে যা মেডিটেশন করার সময় তোমার কনসেন্ট্রেশনকে নষ্ট করে।যেমন, তুমি যখন মেডিটেশন করবে তখন তোমার রুমের টিক্ টিক্ করা দেয়াল ঘড়িটা বন্ধ রাখতে পারো কিংবা পারো রুমের টিভি বা মাথার উপর শোঁ শোঁ করে ঘোরা প্যানটা বন্ধ রাখতে।তাহলে মেডিটেশনে একাগ্রতা সৃষ্টি হবে; উপভোগ করতে পারবে মেডিটেশনকে।

২। মেডিটেশনের সঠিক সময় নির্বাচন করা:

তুমি যখন খুবই বিরক্তকর সময় পার করছো বা তুমি যখন ভীষণ ক্ষুধার্ত তখন মেডিটেশন না করাই শ্রেয়।বরং মেডিটেশনের জন্য এমন সময় বেছে নাও যে সময় তুমি বিরক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তুমি থাকবে শান্ত এবং তুমি প্রশান্তি অনুভব করতে প্রস্তুত থাকবে। সূর্যোদয়ের সময় এবং সূর্য অস্তের সময়টাকে তুমি মেডিটেশনের জন্য নির্বাচন করতে পারো।কেননা এই সময়টাতে পরিবেশ থাকে কোলাহল মুক্ত। যা তোমার মেডিটেশনের জন্য খুবই সহায়ক হতে পারে।

৩। সঠিকভাবে বসে মেডিটেশন করা:

মেডিটেশন করার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সঠিক পজিশনে বসে মেডিটেশন করা।মেডিটেশনের সঠিক পজিশন কোনটি এই নিয়ে আমরা অনেকেই সিদ্ধান্তহীনতায় থাকি। কেউ কেউ মনে করেন মেডিটেশনের জন্য লোটাস পজিশন বা পদ্মাসন সবচেয়ে উপকারী আবার কেউ কেউ মনে করেন  বিছানার মতো আরামদায়ক স্থানে বসে উপযুক্ত যেকোন আসনে বসেই মেডিটেশন করা যায়। তবে মেডিটেশনের জন্য সবচেয়ে বহুল প্রচলিত আসন হলো পদ্মাসন।লক্ষ্য রাখতে হবে তুমি যে আসনেই বসো না কেনো, যাতে হেলে না থাকো। মেরুদন্ড টানটান করে চোখ বন্ধ করো এবং ঘাড় ও কাঁধ রাখো সোজা।

৪। ইনার সাউন্ড অনুভব করা:

আমাদের বাহিরের জগতের চেয়ে ভিতরের জগতটা আরো রহস্যময়।একবার ভবো তো কখনো কি তা অনুভব করতে চেষ্টা করেছ? কখনো কি শান্তভাবে বসে বুঝতে চেষ্টা করেছো যে তোমার মন কি চাইছে? মেডিটেশন করার জন্য সঠিকভাবে বসার পর তোমার এই ইনার সাউন্ডকে অনুভব করতে চেষ্টা করো।এটা সরাসরি তোমার চিন্তা-চেতনা  এবং অনুভবেরর সাথে সম্পর্কযুক্ত।মেডিটেশনে বসার পার এমন চিন্তা নয় যে আমি আগামীকাল বসুন্ধরায় গিয়ে শপিং করবো বা পরশু সিনেপ্লেক্সে গিয়ে  একটা দারুণ মুভি দেখবো।বরং অভজার্ভেশন করো নিজেকে এবং অনুভব করতে চেষ্টা করো তোমার ‍ইনার সাউন্ডকে। এর ফলে ‍তুমি প্রফুল্লতা ফিরে পাবে, নিজেক সতেজ অনুভব করবে সহজেই। এমন করে যদি তুমি রোজ মেডিটেশন করো তবে দেখবে কিছুদিনের মধ্যে তুমি মেডিটেশনের এমন একটি স্টেজে পৌঁছাবে যেখানে শিথিলতা, শান্তি এবং মনের প্রফুল্লতা খুঁজে পাবে।

৫। সুন্দরভাবে মেডিটেশন সমাপ্ত করা:

আমাদের যখন মেডিটেশন শেষ হয় তখন আমরা অনেকেই মেডিটেশন থেকে তাড়াহুড়ো করে উঠে পরি, যা  মোটেই ঠিক নয়। আমরা যখন মেডিটেশনে থাকি তখন আমাদের মন এককেন্দ্রিক থাকে। তাই, এই এককেন্দ্রিকতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমাদের কিছুটা সময় নেওয়া উচিত।এজন্য তুমি যখন তোমার মেডিটেশন শেষ করবে তখন আস্তে আস্তে চোখ খোলো এবং শরীরকে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে একটু সময় নাও। এর ফলে তোমার ভিতরে শিথিলতা বিরাজ করবে এবং তুমি ভলো অনুভব করবে।


< সকল পোষ্টে ফিরে চলুন